সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসনের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমির হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক কবির মিয়ার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জগদল ইউনিয়ন বিএনপির নেতাদের পক্ষ থেকে দলটির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন মিলন এবং সাক্ষরক্ষমতা প্রাপ্ত সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল হকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়, জগদল ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে সমুজ মিয়াকে মনোনীত করা হয়েছে—যিনি অতীতে আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে এলাকায় পরিচিত ও বিতর্কিত। এর আগে তিনি উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আবেদন করেছিলেন। তবে জেলা কমিটির জানুয়ারি মাসের বৈঠকে তার রাজনৈতিক অতীত, আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতা ও দলবিরোধী কর্মকাণ্ড বিবেচনায় তার আবেদন বাতিল করা হয়। একইসঙ্গে বাতিল হয় রশিদ আহমদ বাচ্চু ও সুজাত আহমদ চৌধুরীর আবেদনও।
জেলা বিএনপির ১৬টি ইউনিটে কমিটি গঠনের আগে, যাচাই-বাছাইয়ে যেসব ব্যক্তিদের আবেদন বাতিল করা হয়, তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশে অংশ নেওয়া, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকার অভিযোগ উঠে—যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
এ প্রেক্ষাপটে সমুজ মিয়াকে পুনরায় দায়িত্ব দেওয়াকে জেলা ও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অবজ্ঞা এবং সাংগঠনিক নীতিমালার লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করেন অভিযোগকারীরা। অভিযোগে আরও দাবি করা হয়, ৫ আগস্ট পর্যন্ত সমুজ মিয়াকে কোনো দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যায়নি; বরং অতীতে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছেন, যা এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে সুপরিচিত।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন;
দিরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমির হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক কবির মিয়ার প্রত্যক্ষ সহায়তায় এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে। তারা আরও অভিযোগ করেন, বাতিলপ্রাপ্ত সমুজ মিয়া, রশিদ আহমদ বাচ্চু ও সুজাত আহমদ চৌধুরী সম্প্রতি বিএনপির সভা-সমাবেশ ও ইফতার মাহফিলে অংশ নিচ্ছেন এবং মঞ্চে বসছেন—যা দলীয় নির্দেশনার পরিপন্থী।
এছাড়া যুগ্ম আহ্বায়ক কবির মিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় নেতারা। অভিযোগে বলা হয়, তিনি নিজেই একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি ভাইরাল হয়েছে, যা তার রাজনৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তদুপরি, তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী—যিনি দিরাইয়ের রাজনীতিতে আগে সক্রিয় ছিলেন না—তাকেও উপজেলা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অভিযোগে সমুজ মিয়াকে আহ্বায়ক পদ থেকে অপসারণ, অভিযোগের তদন্ত এবং গ্রহণযোগ্য কাউকে নতুন আহ্বায়ক নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে।
অভিযোগকারীরা হলেন—জগদল ইউনিয়ন যুবদলের মো. মুক্তাদির, ইউনিয়ন বিএনপির নেতা মতি মিয়া ও নুরুজ্জামান। অভিযোগের অনুলিপি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেনকেও দেওয়া হয়েছে।
https://slotbet.online/