পোড়া গন্ধ এখনও ভেসে বেড়াচ্ছে বাতাসে। রক্তমাখা খাতার পাতাগুলো এখন নিঃসঙ্গ, চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা স্কুলব্যাগগুলো যেন ক্ষত-বিক্ষত আত্মার প্রতিচ্ছবি।
এমন দৃশ্য যেন হয়ে উঠেছে সমগ্র ঘটনার হৃদয়ভাঙা প্রতীক।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা।
হঠাৎ করেই আকাশ কেঁপে উঠল।
শিশুদের চিৎকার, বিস্ফোরণের বিকট শব্দ, পুড়ে যাওয়া বইয়ের গন্ধ আর মানুষে-মানুষে ধাক্কাধাক্কি, সব মিলে এক বিভীষিকাময় দুপুর। কতটা ভয়ংকর এই দৃশ্য…..
ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে বের করে আনা ব্যাগের ভেতর পাওয়া গেছে লাঞ্চবক্স; তাতে রাখা ছিল ভাজি ও রুটি।
খাওয়া হয়নি। কেউ হয়তো ঘণ্টা বাজার অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু ঘণ্টা আর বাজেনি।
জীবনের শেষ ঘন্টা বেজেছিল!
স্মৃতির পাজরে আগুনের তান্ডব।
ছেঁড়া খাতার পাতায় কেউ লিখে রেখেছিল- ‘ভবিষ্যতে আমি ডাক্তার হব, ইঞ্জিনিয়ার হব।’
সেই ভবিষ্যতের পাতাটা পুড়ে গেছে। স্বপ্নের পৃষ্ঠাও ছাই হয়ে গেছে।
পুড়ে গেছে টিফিনের জন্য ব্যাগে নিয়ে যাওয়া বিস্কুটের প্যাকেট ও পানির বোতল! একটি ছেঁড়া রুটিও হয়ে উঠেছে জাতির শোকের প্রতীক। সেই রুটি যার আধা খাওয়া অংশ দেখে বোঝা যায়, কেউ খেতে বসেছিল, কিন্তু আর শেষ করতে পারেননি। যে রুটি হয়তো একজন মা বানিয়েছিলেন ভালোবাসায়, শিশুর হাতে দিয়েছিলেন। কিন্তু সন্তান খায়নি, আগুনে খেয়ে নিল সন্তানের জীবন!
জীবন কখনও কখনও এমন নির্মম হয়। ছেঁড়া রুটি, ছিন্ন ব্যাগ, পোড়া খাতা আর নিখোঁজ স্বপ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে এক জাতি— নীরব, অভিশপ্ত। এই অপূর্ণ আহার আর অপূর্ণ জীবন যেন প্রতিদিন নতুন করে খোঁচা দেয় আমাদের হৃদয়ে। আজ আর ওই শ্রেণিকক্ষে ঘণ্টা বাজেনি। কিচিরমিচির শব্দ হয়নি আজ।
https://slotbet.online/