জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপি। প্রার্থী ঘোষণার সময় ৬৩টি আসন খাঁলি রেখেছে দলটি। তন্মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার ৫টি আসনের মধ্যে ৩টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ফাঁকা রয়েছে ২টি। এই ২টি আসনে বিএনপির প্রার্থী কে হবেন? না-কি জোটসঙ্গীদের জন্য বরাদ্ধ রেখেছে সেটি নিয়ে চলছে আলোচনা পর্যালোচনা।
ধারনা করা হচ্ছে সমমনা জোটসঙ্গী/এনসিপি বা জমিয়তের জন্য খালী রাখা হয়েছে। বিশেষ করে ধর্মভিত্তিক সর্ববৃহত প্রাচীন দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাথে বিএনপির নির্বাচনী সমঝোতা হলে ১০/১৫টি আসন ছাড় দিতে পারে। সে হিসাবে দলের শক্তঘাটি সুনামগঞ্জে কমপক্ষে একটি আসন ছাড় দিতে পারে। কারণ বিগত ৪টি নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৩ আসনটি বরাবর জমিয়তকে ছাড় দিয়ে এসেছে। জমিয়তের প্রার্থী হিসেবে শাহীনূর পাশা চৌধুরী উপনির্বাচনে এমপিও নির্বাচিত হন। ধারনা করা হচ্ছে আসনটি বিএনপির যুক্তরাজ্য শাখার সেক্রেটারী কয়সর এম আহমদকে দিয়ে দেওয়ায় বিনিময়ে সুনামগঞ্জে অন্য একটি আসন ছাড় দিতে পারে। সে হিসাবে সুনামগঞ্জ-২ অথবা-৪ যেকোন একটি আসন জমিয়তকে ছেড়ে দিতে পারে।
সুনামগঞ্জ-২ আসনে দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শুয়াইব আহমদ অথবা সুনামগঞ্জ-৪ আসনে দলের কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা হাফিজ মুখলিছুর রহমান চৌধুরী জোটের নমিনেশন পেতে পারেন।
উল্লেখ্য আরো ৪মাস পূর্বে সুনামগঞ্জের ৫টি আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। প্রার্থীগণ স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকায় জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ সুনামগঞ্জ-৪ আসনে জমিয়তের সাংগঠনিক অবস্থা অনেক শক্তিশালী। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সাংগঠনিক কমিটি রয়েছে। গত মাসে কেন্দ্রীয় মহাসচিবকে এনে ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন করে দলের অবস্থান জানান দিয়েছেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থী মাওলানা হাফিজ মুখলিছুর রহমান চৌধুরী।
এবার জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রধান প্রতিপক্ষ জামায়াতে ইসলামির নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী জোট হচ্ছে। সে হিসাবে ধর্মভিত্তিক এই দলের সাথে সমঝোতা করতে বিএনপি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে যাচ্ছে।
বৃহত্তর সিলেটে দলটির রয়েছে প্রচুর জনশক্তি। যেকোন আসনে নির্বাচন করার মতো স্বক্ষমতা তাঁদের প্রত্যেক প্রার্থীর রয়েছে। এছাড়া দেশের শীর্ষ উলামা মাশায়েখদের সাপোর্ট রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই দলের সাথে। কিছুদিন পূর্বে জমিয়তের ডাকা উলামা মাশায়েখ সম্মেলনে হেফাজত আমির আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, মহাসচিব সাজিদুর রহমানসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়ে সেই ম্যাসেজ দিয়ে দিয়েছেন।
জমিয়তকে যেসব আসনে ছাড় দিতে গ্রিন সিগনাল দিয়েছে বিএনপি। তন্মধ্যে সিলেট-৫ আসনে দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, বি:বাড়িয়া-২ আসনে সহসভাপতি মাওলানা জুনাইদ আল হাবীব, নিলফামারী-১ আসনে মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, নারায়নগঞ্জ-৪ আসনে যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীকে সমর্থন জানাতে সম্মত হয়েছে বিএনপি। এর বাইরে আরো কয়েকটি আসনে সমঝোতা করার চেষ্টা চলছে বলে জমিয়তের কেন্দ্রীয় একটি সূত্র জানিয়েছে।
আজ দলের প্রার্থীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভায় প্রার্থীগণ সম্মানজনক আসনে সমঝোতা না হলে এককভাবে নির্বাচন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
দলের একটি সূত্র জানিয়েছে কাঙ্খিত সমঝোতা হলে সিলেট-৪ আসনে দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মুহাম্মদ আলী, কিশোরগঞ্জ-১ আসনে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদুল্লাহ জামি, সুনামগঞ্জ-২ আসনে ড. মাওলানা শুয়াইব আহমদ, চট্রগ্রাম-৪ আসনে মাওলানা নাসির উদ্দীন মনির, ফরিদপুর-১ আসনে মুফতি জাকির হোসাইন, নরাইল-১ আসনে মুফতি তালহা ইসলাম, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে মাওলানা হাফিজ মুখলিছুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-৬ আসনে হাফিজ ফখরুল ইসলামের আসন ছাড় দিতে হবে।
https://slotbet.online/